যারা শপিফাই এর ব্যপারে কিছু জানেন না, তাদের বলি, শপিফাই শুরু হয় মাত্র
২ বছর আগে একটা পুরো ইকমার্স সলিউশন হিসেবে। শপিফাই এর আইডিয়া টাই হল যে
আপনাকে একটা ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানানোর জন্য একদম ই চিন্তা করতে হবে না।
শপিফাই এ বানাতে পারবেন কয়েক ক্লিক এ এবং শপিফাই পেমেন্ট মেথড ইত্যাদি সব
ঝামেলা হ্যান্ডেল করবে। আপনার কাজ হবে শুধু প্রোমোট করা প্রোডাক্ট টা এবং
কেউ অর্ডার করলে তার বাসায় পৌঁছে দেয়া। মজা তাই না?
আমি জানি অনেকেই কি ভাবছেন। অনেকেই ভাবছেন, কিভাবে আমি ইন্টারন্যাশনালি
বিভিন্ন মানুষের বাসায় অর্ডার পৌঁছে দেবো বাংলাদেশে বসে থেকে, তাই না?
এখানেই চলে আসে একটি মেথড যার নাম “ড্রপশিপিং”। এই ড্রপশিপিং এবং শপিফাই
ব্যবহার করে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে অনেক মানুষ লাখ লাখ ডলার আয় করে ফেলেছে।
যদিও বাংলাদেশে এখনো খুব বেশি মানুষ শপিফাই এ আগ্রহী হয় নি তবে আস্তে আস্তে
হচ্ছে। আমাদের পরিচিত বেশ কিছু মার্কেটার মাসে ১-২ হাজার ডলার করে আয় করছে
শপিফাই এর মাধ্যমে এবং মজার ব্যপার হল, এটা কিন্তু অত ও কঠিন কোন কাজ না।
আসুন আমরা স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করি পুরো ব্যপার টা। শেষ স্টেপ
পর্যন্ত পড়লেই আপনার সব কনফিউশন দূর হয়ে যাবে। তারপরেও যদি প্রশ্ন থাকে,
কমেন্ট করলেই আমরা উত্তর দেবো।
শপিফাই দিয়ে কিভাবে আয় করা যায়?
শপিফাই এর আয় করার স্টেপ গুলো বলার আগে, একটু আপনাদের বোঝাই ড্রপশিপিং
ব্যপার টা কি। ড্রপশিপিং মানে হল যখন আপনার কোন প্রোডাক্ট নেই, আপনি কেউ
কিছু অর্ডার করলে মূল সেলার কে তার ঠিকানা দিয়ে পাঠিয়ে দিতে বলেন জিনিস টা।
একটা উদাহরণ দেই ব্যপার টা সহজ করতে। ধরুন আপনি চায়নায় একটা বারবি ডল
বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করলেন যে বারবি ডল বানায়। তাকে বললেন যে আমি একটা
ফেসবুক পেজ খুলে এমেরিকায় বারবি ডল বিক্রি করবো। যখন ই একটা বিক্রি হবে এবং
ক্লায়েন্ট আমাকে ঠিকানা দেবে, তোমাকে আমি ঠিকানা দিয়ে দেবো, তুমি বারবি ডল
পাঠিয়ে দেবে ঐ ঠিকানায়।
আপনি হয়তো এজন্য সেই চাইনিজ সেলার কে প্রতি বারবি ডলার এ দেবেন ২ ডলার
করে আর আপনি বিক্রি করবেন ৯ ডলার এ। মাঝখানের এই ৭ ডলার আপনার লাভ।
সুবিধা কি? সুবিধা হল আপনি তখন ই চাইনিজ সেলার কে টাকা দেবেন যখন আপনার
একটা বারবি বিক্রি হবে। তার মানে হল আগে থেকে কিনে জমিয়ে রাখতে হচ্ছে না
প্রোডাক্ট, রিস্ক অনেক কম। তাই না? এই পুরো ব্যপার টিকে বলা হয় ড্রপশিপিং।
ড্রপশিপিং অনেক দিন ধরেই করে আসছে মানুষ। ড্রপশিপিং এর কোম্পানি বিক্রিও
হয় ভাল দামে। তবে শপিফাই আসার পরে পুরো ব্যপার টা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।
আসুন এবার আমরা স্টেপ বাই স্টেপ দেখি শপিফাই দিয়ে কিভাবে আয় করা যায়।
স্টেপ ১ঃ শপিফাই এ একাউন্ট খোলা
শপিফাই এ একাউন্ট খোলা পুরোপুরি ফ্রি। একাউন্ট খুলতে ক্লিক করুন এখানে।
এই লিঙ্ক টা আপনাকে ১৪ দিন এর একটি ফ্রি ট্রায়াল দেবে। এরপর বাকিটা যে কোন
ওয়েবসাইটে নরমাল একাউন্ট খোলার মতই। একাউন্ট খোলার আগেই আপনার ডিসিশন নিতে
হবে আপনি কি প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করবেন, একটা প্রোডাক্ট হবে নাকি একটা
ক্যাটাগরি হবে। সফল শপিফাই স্টোর গুলো একটা ক্যাটাগরি নিয়ে কাজ করে।যেমন
আপনি একই সাইটে যদি বিড়াল এর খেলনা এবং মহিলাদের ব্যাগ বিক্রি করতে চান,
তাহলে পরে যখন মার্কেটিং করবেন তখন অনেক সমস্যা হবে। এজন্য একটা ক্যাটাগরি
বা একটা সিঙ্গেল প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করা ভাল।
স্টেপ ২ঃ প্রোডাক্ট সিলেক্ট করা
প্রোডাক্ট সিলেক্টের জন্য আমরা চলে যাবো আলিবাবা এবং আলি এক্সপ্রেস
এর ওয়েবসাইট এ। এই ২ টা ওয়েবসাইটেই কম দাম এ ভাল প্রডাক্ট পাওয়া যায় এবং
২টি ওয়েবসাইট ই ড্রপশিপিং এর জন্য ব্যবহার করে আমাদের মত অনেক মার্কেটার
রা। ভাল প্রডাক্ট খুঁজুন এখন আপনার পছন্দের ক্যাটাগরি তে। কম দামি
প্রোডাক্ট খুজবেন যেঁগুলোর দাম ২-৪ ডলারের মধ্যে। দাম কম হলে আপনি বেশি দাম
এ বিক্রি করে বড় মার্জিন রাখতে পারবেন প্রফিট হিসেবে।
স্টেপ ৩ঃ সাইট ডিজাইন করা
শপিফাই সাইট ডিজাইন করা খুব সহজ। আপনার কোন কোডিং বা অন্যান্য স্কিল
থাকা প্রয়োজন না শপিফাই এর সাইট ডিজাইন করতে। ইউটিউবে সার্চ দিলে হাজার
হাজার টিউটোরিয়াল পাবেন এ ব্যপারে। সাইট ডিজাইন শুরু করে দিন। আপনাদের
সুবিধার জন্য কিছু জনপ্রিয় শপিফাই সাইট এর লিঙ্ক দিয়ে দিচ্ছিঃ
- https://faucetface.com/
- https://tattly.com/
- https://www.chalkd.co.nz/
এরকম লাখ লাখ উদাহরণ আছে যেসব ওয়েবসাইট প্রতি মাসে ৫০-৬০ হাজার ডলার করে
আয় করছে। অবশ্যই আপনি প্রথম দিকে এত বড় আয়ের প্ল্যান করবেন না। শুরু করুন
প্রতি মাসে ৫০০ ডলার আয়ের একটি টার্গেট নিয়ে।
স্টেপ ৪ঃ মার্কেটিং
শপিফাই এ সাইট তো সবাই বানাতে পারে। তবে সব সাইট তো সফল হয় না। সব সাইট
থেকে বিক্রি হয় না। কেন? মনে আছে আর্টিকেল এর শুরু তে ফেসবুক এড এর একটা
ছবি দিয়েছিলাম? মার্কেটিং শুরু করতে হবে এখন আপনার সাইটের জন্য আপনার যেন
সাইট টি সঠিক মানুষ দের সামনে পৌঁছায়।
প্রায় সব শপিফাই স্টোর এমেরিকান অডিয়েন্স টার্গেট করে কাজ করে। আপনিও
তাই করুন। শুরু করুন ফেসবুক এড দিয়ে। ভালমতো টার্গেটিং করে ফেসবুক এড খুব
সহজেই আপনাকে আদর্শ কাস্টোমার এর সামনে নিয়ে যাবে।
এছাড়া ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং, ফেসবুক গ্রুপ গুলো তে মার্কেটিং, এসইও সহ অনেক কিছু করা যায় সাইট কে আরো পপুলার বানাতে।
এই তো। হয়ে গেলো সব কিছু। এখন শুধু প্রোডাক্ট বিক্রি হবে, আপনি
কাস্টোমার এর ডিটেইল নিয়ে আলিবাবা থেকে অর্ডার দিয়ে প্রোডাক্ট টা সেই
কাস্টোমার এর কাছে পাঠিয়ে দেবেন। আপনার কখনোই প্রোডাক্ট টা দেখতে হবে না
সামনাসামনি কিন্তু মাঝখানের বিশাল একটা লাভ হচ্ছে আপনার।
মজা, তাই না?
শপিফাই কি
ReplyDelete